মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে কুষ্টিয়ার আদালত চত্বরে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী জীবন মাহমুদ ডাবলু কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে ওই মামলার এজাহারভূক্ত ২৭ নম্বর আসামী। ডাবলু মোল্লা ওরফে জীবন মাহমুদ ডাবলু কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়া এলাকার কাওসার মোল্লার ছেলে।
শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডাবলুর সম্পর্কে বিভিন্ন সূত্রে যতটুকু জানা যায়। ডাবলু গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার কালুখালী এলাকার পল্লীতে। শিক্ষাগত যোগ্যতা তার উল্লেখযোগ্য নাই বললেই চলে। কালুখালি এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের কারণে তাকে এলাকা ছেড়ে কুষ্টিয়া আশ্রয় নিতে হয়।
কুষ্টিয়া এসে দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের পিছনে বস্তি এলাকায় বসবাস শুরু করে। এখানে সে বস্তি এলাকার সহ কিছু নেশাখোর তার সাগরেদ তৈরি করে। শুরু হয় জীবন মাহমুদ ডাবলুর জীবনের ইতিহাস তৈরি করা।
সূত্রে জানা যায় কুষ্টিয়া জিয়া শিশু পার্ক রোড, মীর মোশাররফ হোসেন স্কুল রোড যা বর্তমানে RAB গলি নামে পরিচিত, কলেজ রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় রাত্রে বাসে আসা বিভিন্ন যাত্রীদের বাড়ি ফেরার সময় তাদের সবকিছু ছিনতাই করা।
ছিনতাই চুরি ছোটখাটো ডাকাতি এগুলো করে হাত পাকিয়ে শুরু করে কিডন্যাপ বাণিজ্য। জীবন মাহমুদ ডাবলুর অনেক ছিনতাই কিডন্যাপের ইতিহাস না জানা গেলেও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের বড়বাবুর ছেলে যার বাড়ি সিরাজুল হক চৌধুরী ওস্তাদ ভাই রোডের গড়াই টাওয়ারের পিছনে তিনতলা বাড়ির ছেলে। তাকে কিডন্যাপ করার পর হাতেনাতে গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে পাবনা ডিগ্রীর চর এলাকায়। সেখান থেকে গ্রেপ্তার হয়ে এই মামলায় ডাবলুর অনেক বছরের সাজা হয়ে যায়।
জেল খেটে কুষ্টিয়া কারাগার থেকে বেরিয়ে ডাবলু আবার সতর্কতার সাথে পুরানা স্বপেশায় থাকে। এরপর ভোল পাল্টে নিরাপদ থাকার সাইনবোর্ড হিসাবে নিজেকে সাংবাদিক নামে জাহির করতে থাকে, জুটে যায় তার সাথে কিছু দাগি লোকজন।
কুষ্টিয়ায় একটি পেশা খুব সহজ যেটা লেখাপড়া খুব বেশি না জানলেও ভুয়া বিএ এমএ পাস সার্টিফিকেট দিয়ে স্যাটেলাইট চ্যানেল সহ বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিনিধি হওয়া যায় এবং এ জেলায় সহজে সাংবাদিক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকও হওয়া যায়।
এভাবে ডাবলু একসময় কুষ্টিয়া স্বর্ণযুগ নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক থেকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বনে যায় যদিও বর্তমানে ওই পত্রিকা থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে ডাবলু কুষ্টিয়ার কেপিসি নামক প্রেসক্লাবের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে সেখানে তার সেলটারে চলতে থাকে।
যেমন দরকার ছিল রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের সাংবাদিক নামের ক্যাডার বাহিনী ঠিক তেমনি জীবন মাহমুদ ডাবলুরও প্রয়োজন ছিল বিপ্লবের মত একটি হাত মাথার উপরে যা সমস্ত অপকর্ম ওই হাতের গুনে পার পাওয়া যায়।
জেলার প্রকৃত সাংবাদিকদের সাথে রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বিভিন্ন দ্বন্দ্বে জড়ালে তার কেপিসিতে আশ্রয় দেয়া বিভিন্ন সাংবাদিক নামের অস্ত্রধারী আন্ডারগ্রাউন্ডের লোকজন কে লেলিয়ে দিত ডাবলুর মত বাটপারদের প্রকৃতি সাংবাদিকদের অত্যাচার নির্যাতন করতে। এরই ধারাবাহিকতায় কুষ্টিয়া কোর্টে একটি মামলায় হাজিরা দিতে আসেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য আমার দেশে পত্রিকার সম্পাদক শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক ডঃ মাহমুদুর রহমান সাহেবের উপরে হামলা করা হয় এবং তাকে মেরে র*ক্তা*ক্ত জখম করা হয়। এই মামলায় জীবন মাহমুদ ডাবলু এজারভুক্ত ২৭ নম্বর আসামি।
উক্ত মামলায় শনিবার রাত্রে গ্রেফতার হয়ে গুণধর আবার কুষ্টিয়া কারাগারে।
ডাবলুর নামে ছিনতাই চাঁদাবাজি ডাকাতি ধর্ষণ কিডন্যাপ ব্লাকমেইলিং সহ নানাবিধ মামলা থাকলেও অনেকেই তার নামে মামলা করেনি যেহেতু তার গুরু ছিল কেপিসির সভাপতি।
ডাবলুর নামে গত মাসেও বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি ও এজাহার অভিযোগ হোয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বলে জানা গেছে।
সাংবাদিক নামের সাংঘাতিক জীবন মাহমুদ ডাবলুর সঠিক এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে এই প্রত্যাশায় ভুক্তভোগীরা।
Leave a Reply