বিশেষ প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলা, থানা ও জেলা পর্যায়ে কৃষকদের দ্বারা স্থাপিত বিদ্যুতের ফাঁদ ভয়াবহ প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে। এসব ফাঁদে প্রতিবছর শত শত মানুষ, গবাদি পশু ও বন্যপ্রাণী প্রাণ হারাচ্ছে। চরফ্যাশনসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষিজমি ও মাছের পুকুর পাহারা দেওয়ার নামে এই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেক কৃষক ফসলের জমি ও পুকুর রক্ষার জন্য চারদিকে বিদ্যুতের তার লাগিয়ে রাখেন। রাতে পথচলা মানুষ অসাবধানতাবশত এই তারের সংস্পর্শে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান। একইভাবে, গরু-ছাগল ও অন্যান্য প্রাণীও মারা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, চুরি রোধের নামে অনেকেই এই অবৈধ লাইন ব্যবহার করছেন, যা অজান্তেই পরিণত হচ্ছে মৃত্যুফাঁদে।
আইন অনুযায়ী, বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এসব প্রাণঘাতী ফাঁদ রয়ে যাচ্ছে অপ্রত্যাশিতভাবে চালু। মানবাধিকার সংগঠন ও গণমাধ্যম কর্মীরা এ বিষয়ে বহুবার সচেতনতামূলক প্রচারণা চালালেও তাতে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি।
অবিলম্বে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ অপসারণে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারণা বাড়াতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগকে আরও কঠোর হতে হবে, যাতে বিদ্যুতের এই প্রাণঘাতী ফাঁদ নির্মূল করা যায়।
দেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি। না হলে প্রতি বছর আরও অনেক নিরীহ প্রাণ অকালেই ঝরে যাবে।
Leave a Reply