কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ যে স্টাইলে দখলদারিত্ব ও লুটপাটের রাজনীতি করেছে, সেই একই স্টাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও জাকির হোসেন সরকার রাজনীতি করছেন।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন দলটির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার, আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু, মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, জালাল উদ্দীন শেখ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. শামীম উল হাসান অপু, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মেজবাউর রহমান পিন্টু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এস এম গোলাম কবির, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ইমরান আহমেদ সঞ্জু, শহর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবু জাফর মহম্মদ মতিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বশিরুল আলম চাঁদ, সাবেক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দা মহিবুল হক চৌধুরী (মিলন), খোকসা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ খান রাজু, জেলা কৃষকদলের সাবেক সভাপতি গোলাম কবির, সাইফুজ্জামান সুজন সাবেগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া শহর যুবদল,জেলা উপজেলার ছাত্রদল, কৃষক দল, যুবদল, শ্রমিক দল প্রমুখ।
এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন খোকসা, কুমারখালী,মিরপুর, ভেড়ামারা,দৌলতপুরের পদবঞ্চিত ত্যাগী নেতাকর্মীবৃন্দ।
সার্বিক আয়োজনে ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ত্যাগী ও পদবঞ্চিত শতাধিক নেতাকর্মী।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটি বাতিল ও কমিটিতে আওয়ামী দোসর অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিমুল হাসান অপু বলেন, যে স্টাইলে রাজনীতি করেছেন হানিফ-আতা (মাহবুবউল আলম হানিফ ও তার ভাই সদর উপজেলা চেয়ারম্যান) সেই স্টাইলে তাদেরই যোগসাজশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে হানিফের স্ত্রীকে বাদ দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন হয়েছে। সেখানে কুতুব উদ্দিন ও জাকির হোসেন মালিকানা নিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর যে কয়েকটি থানার আহ্বায়ক কমিটি করেছে, সেই কমিটিগুলো জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির স্টাইলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে অযোগ্য দুর্বল ও আওয়ামী সরকারের সঙ্গে আঁতাতকারীদের নিয়ে কমিটি করেছে।
পদবঞ্চিত নেতারা বলেন, দাবি আদায়ের লড়াই এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগির নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পরেই যে কয়েকটি থানার আহবায়ক কমিটি গঠন করেছে সেই কমিটি গুলো জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির স্টাইলে ত্যাগী-পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে অযোগ্য, দুর্বল ও আওয়ামী সরকারের সাথে আতাতকারীদেরকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দৌলতপুর থানা বিএনপির কমিটি ঘোষনা করার পর পরই সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যে কোন সময় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা করছে দৌলতপুর থানা বিএনপির নেতা কর্মীরা।
মিরপুর থানা বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে আশরাফুল ইসলাম শাহিনকে, যিনি নীর্ঘ ১৬ বছর বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, মিরপুর থানা বিএনপির ১নং সদস্য মিরপুর-ভেড়ামারার আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিনের ঘনিষ্ট ব্যাক্তি এবং তার সাথে বেশ কয়েকটি প্রোগ্রামের ছবি আছে। ২৭নং সদস্য আলী হীম দীর্ঘ ৩০ বছর বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। ২৮ নং সদস্য মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন সৌদিআরব প্রবাসী।
কুমারখালী থানা বিএনপির চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে কুমারখালী থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ককে বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। সাবেক কমিটির ১নং যুগগ্ম-আহবায়ক হাফিজুর রহমান (চেয়ারম্যান) কে ৪নং যুগ্ম-আহবায়ক করা হয়েছে, যা ঐ সমস্ত নেতৃবৃন্দকে ব্যাপক ভাবে অপমান করার শামিল। আর দীর্ঘ ১৬ বছর বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকা আনসার প্রামানিককে আহবায়ক মনোনিত করা হয়েছে। কুমারখালী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মমিনুল হক ঢাকাতে অবস্থান করে ব্যাবসা বাণিজ্য করতেন। অথচ তাকে এই পদে পদায়ন করা হয়েছে। খোকসা থানা বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে সাবেক জাসদ নেতা আলাউদ্দিন খাঁনকে যিনি দীর্ঘ ১৬বছর খোকসাতে অবস্থান করেননি এবং কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। ৫ আগষ্টের পরে লুটপাট ও দখল দারিত্বে ব্যস্থ ছিলেন। সদস্য সচিব হয়েছেন খোকসা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আনিস উজ জামান স্বপন যিনি বর্তমানে পিএলআর এ আছেন। ১৪ নং সদস্য আনোয়ার হোসেন ও ২৩ নং সদস্য পোকন মল্লিক সরাসরি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। খোকসা পৌর বিএনপির আহবায়ক একজন নিষ্ক্রিয় বিএনপির কর্মি ও সদস্য সচিব এসএম মোস্তফা শরিফ দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে অনুপস্থিত ছিলেন। কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্বল এবং অযোগ্য কমিটি গঠন করেছে কুতুব উদ্দিন এবং জাকির সরকার। এই কমিটির আহবায়ক এর নামে কোন রাজনৈতিক মামলা নেই এবং কুষ্টিয়া পৌর বাসির কাছে পুরোপুরি একজন অচেনা মুখ। এই কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক জনাব রবিউর রহমান রবিউল একজন আওয়ামীলীগ নেতা যিনি মাহবুব আলম হানিফের কাছে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে। স্বজনপ্রিতির আশ্রয় নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ৭জন সদস্যকে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপিরও সদস্য করা হয়েছে।
কুমারখালী থানার অনুগত বাগুলাট ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির আহবায়ক মোঃ আলো একজন জাসদ নেতা এবং সদস্য সচিব একজন আওয়ামীলীগের কর্মী। চাঁপড়া ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির ৭ জন সদস্যর মধ্যে ৬জন সদস্যই আওয়ামীলীগ নেতা। নন্দলালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য ভূমিহিন রঞ্জু আহমেদ আওয়ামীলীগের কর্মী। খোকস
সম্পাদক ও প্রকাশক বাহাদুর চৌধুরী, সহসম্পাদক মেহেদী হাসান হৃদয়,
অফিস : চৌধুরী কমপ্লেক্স, চেয়ারম্যান , চরফ্যাশন, ভোলা। মোবাইল: ০১৩২৩০০২৩৭৭,০১৬১০০৯৩৬২২ ইমেইলঃ dainikdakshineroporadh@gmail.com