এম. ইব্রাহিম খলিল,,
সদকাতুল ফিতের অর্থ,,,
সদকাতুন অর্থ হলো,, দান করা, ( ফিতর শব্দের অর্থ হলো,,) ভঙ্গ করা, ধ্বংস করা, বিদীর্ণ করা,
উভয়ের সম্মিলিত অর্থ হলো,, দানের মাধ্যমে ভঙ্গ করা, আর শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখকে يوم الفطر / عيد الفطر বলা হয়,, কেননা একাধারে একমাস রোজা রাখার পর ঐ তারিখে ভঙ্গ করা হয়।
কাজেই)(عيد الفطر) ঈদুল ফিতরের দিন নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক তার নিজের ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান সন্ততির পক্ষ থেকে শরিয়ত কতৃক নির্ধারিত যে সদকা আদায় করা হয় তাকে সদকাতুল ফিতের বলে,,
সদকাতুল ফিতের হুকুম কি,,,,
১// ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমাদ রহঃ এর মতে সদকাতুল ফিতের আদায় করা ফরজ,,
শাফেয়ী ও আহমাদ রহঃএর দলিল,,
قال فرض رسول الله صلي الله عليه وسلم صدقة الفطر ،،
অর্থ, রাসুল সাঃ সদকাতুল ফিতের ফরজ করেছেন,( তিরমিজি)
ইমামে আযম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সদকাতুল ফিতের ওয়াজিব,,
আবু হানিফার দলিল,, হযরত আমর ইবনে শুয়াইব এর হাদিস,,
ان انبي صلي الله عليه وسلم بعث مناديا في فجاج مكة الا ان صدقة الفطر واجبة علي كل مسلم ،،
অর্থ,, নবী কারীম সাঃ মক্কায় একটি বর্তাবাহক পাঠিয়েছিলেন, সদকাতুল ফিতের প্রত্যেক মুসলমানের উপর ওয়াজিব,, ( তিরমিজি),
মুস্তাদরাকে হাকেমের মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ সুত্রে বর্ণিত আছে,,
انه عليه السلام امر صارخا ببطن مكة ينادي ان صدقة الفطر حق واجب علي كل مسلم ،،
অর্থ,, , মক্কার হৃদয়ে চিৎকার করে একটি আদেশ জারি করেছিলেন যে জাকাতুল ফিতর প্রত্যেক মুসলমানের জন্য একটি অধিকার এবং একটি বাধ্যবাধকতা,,
এছাড়াও বুখারী মুসলিমের মধ্যে امر رسول الله صلي الله عليه بزكوة الفطر শব্দ এসেছে,,
আর এই সব হাদিস দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে ওয়াজিব হওয়া প্রমানিত হয়,,
( সদকাতুল ফিতের ওয়াজিব হওয়ার নিসাব) ,,
যে ব্যক্তি ঋণ এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ব্যতীত অতিরিক্ত এই পরিমাণ মূল্যের সম্পদ বা আসবাবপত্র আছে, যে পরিমাণ মূল্যের উপর যাকাত ওয়াজিব হয়, অর্থাৎ সারে ৫২ তোলা সমপরিমাণ দামের সম্পদ ও আসবাবপত্র থাকে তাহলে তার ওপর ঈদুল ফিতরের দিন সদকা দেওয়া ওয়াজিব,, চাই সেটা ব্যবসার সম্পদ হোক অথবা অন্য সম্পদ হোক, চাই তার উপর এক বছর অতিবাহিত হোক অথবা না হোক,,
((সদকাতুল ফিরতের পরিমাণ))
মাসআলা, খেজুর হলে ‘ এক সা ‘( অর্থাৎ ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম যা সতর্ককতা হিসাবে সাড়ে তিন কেজি ধরা হয়) খেজুর অথবা মধ্যম পযার্য়ের সাড়ে তিন কেজি খেজুরের মুল্যো আদায় করা। এক্ষেত্রে প্রত্যেক বছর রমযানে বাজার যাচাই করে দাম নির্ধারণ করতে হবে,।
মাসআলা,, জব হলে,, ‘এক সা ‘ অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন কেজি জব অথবা মধ্যম পর্যায়ের সাড়ে তিন কেজি জব এর মুল্য পরিশোধ করা,,
মাসআলা,, মিসমিস হলে ‘ এক সা’ অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন কেজি কিসমিস অথবা মধ্যম পর্যায়ের সাড়ে তিন কেজি কিসমিস এর মল্য পরিশোধ করা,,।
মাসআলা,, গম হলে ” আধা সা” ( অর্থাৎ ১ কেজি ৬৩৬ গ্রাম, যা সতর্কতা হিসেবে পৌনে দুই কেজি ধরা হয়) গম অথবা পৌনে দুই কেজি গমের মুল্য পরিশোধ করা,,
মাসআলা,, আটা হলে পৌনে দুই কেজি দেওয়া উচিত অথবা পৌনে দুই কেজির মুল্য দেওয়া উচিত, ।
মাসআলা,, কিসমিস,খেজুর, জব, গম, ব্যতীত যদি অন্য কোন জিনিস দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করা হয়, তাহলে তার মূল্য ন্যূনতম পৌনে দুই কেজি গমের মূল্যের বরাবর হওয়া আবশ্যক,, ( ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী,১/১৯২,,)
(মাদ্রাসায় সদকাতুল ফিতের দেওয়া??)
মাসআলা,, দ্বীনি মাদ্রাসার গরিব,অসহায়, এতিম ছাত্রদেরকে ফিতরা দেওয়া সর্বাধিক সাওয়াবের কাজ, এমতাবস্থায় জারিয়া এর সাওয়াব ও পাওয়া যাবে,,
( ফাতাওয়ায়ে শামী,,২/৩৫৪,,,
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান করুন ,, আমিন,,
Leave a Reply