বাহাদুর চৌধুরী, সম্পাদক ও প্রকাশক
পটুয়াখালীর বাউফলে মানহানিকর ফেসবুক পোস্ট এবং একটি পুরোনো রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হওয়া কলেজ ছাত্রী সানজানা খান সিথী (২৪) অবশেষে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। সোমবার (৭ এপ্রিল) পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান হোসেন শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষে জামিন শুনানিতে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম খান রিপন ও অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম।
এর আগে শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে সিথীকে তার পৌরশহরের বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। এর কিছুক্ষণ আগে তিনি পাবলিক মাঠসংলগ্ন স্বপ্ন শপ থেকে কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পরপরই পুলিশ তাকে আটক করে এবং তার মোবাইল ফোন জব্দ করে।
বাউফল থানা সূত্র জানায়, সানজানার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের নামে মানহানিকর পোস্ট দিচ্ছেন। তবে থানা হেফাজতে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল পরীক্ষা করেও কোনো ফেক আইডির প্রমাণ পায়নি পুলিশ।
শনিবার বিকাল ৩টায় তাকে একটি পুরোনো রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। মামলাটি ছিল বাউফল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক খলিলুর রহমানের করা (মামলা নং ২৪/৮/২০২৪)। উক্ত মামলায় সিথী এজাহারভুক্ত আসামি না হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সিথীর দাবি, তাকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করা হয়েছে। পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় লেলিয়ে দেওয়া কিছু যুবক তার গায়ে ডিম ছুড়ে মারে, যা একজন বন্দির প্রতি চরম অবমাননা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে একে একজন সম্মানিত ছাত্রীকে সামাজিকভাবে হেয় করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।
বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, “সিথীকে একটি মারামারির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং তার পরিবার আওয়ামী লীগের সক্রিয় সমর্থক।” তবে অভিযুক্ত কর্মকাণ্ডের পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
Leave a Reply